সুরা ইয়াসিন কুরআনের ৩৬তম সুরা, যা মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং মর্যাদাপূর্ণ সুরা হিসেবে বিবেচিত। সুরাটির মূল বিষয়বস্তু হলো তাওহিদ (আল্লাহর একত্ববাদ), রিসালাত (পয়গম্বরদের দায়িত্ব) এবং আখিরাত (পরকাল)। এতে মোট ৮৩টি আয়াত রয়েছে।
মূল বিষয়বস্তু
1. আল্লাহর একত্ববাদ:
সুরাটিতে আল্লাহর সৃষ্টির বিভিন্ন নিদর্শন তুলে ধরা হয়েছে, যেমন দিন ও রাতের পরিবর্তন, চাঁদ ও সূর্যের নিয়মিত চলাচল। এগুলো মানুষের জন্য আল্লাহর কুদরতের প্রমাণ।
2. রিসালাত:
প্রাথমিক আয়াতগুলোতে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সত্যতার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এতে একটি বিশেষ শহরের অধিবাসীদের কাছে তিনজন রাসুল প্রেরণের ঘটনাও উল্লেখ করা হয়েছে, যা থেকে শিক্ষা নেওয়া যায়।
3. আখিরাতের বর্ণনা:
মৃত্যুর পরের জীবন, পুনরুত্থান এবং মানুষের কর্মফলের বিচার নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সুরাটিতে জান্নাতের সুখ এবং জাহান্নামের শাস্তি সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে।
4. ক্ষমা ও দয়া:
সুরাটিতে আল্লাহর দয়া ও ক্ষমার কথাও উল্লেখ আছে। আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের জন্য ক্ষমা প্রার্থনার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিশেষ গুরুত্ব
সুরা ইয়াসিনকে কুরআনের "হৃদয়" বলা হয় (হাদিসে উল্লেখিত)।
এটি নিয়মিত পাঠ করলে বিপদ-মুসিবত দূর হয় এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভ হয়।
মৃত্যুর আগে কেউ এটি পাঠ করলে তার মৃত্যু সহজ হয় বলে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে।
পাঠের ফজিলত
1. রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি রাতে সুরা ইয়াসিন পাঠ করে, সে রাতে তার পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।" (তিরমিজি)
2. "সুরা ইয়াসিন পাঠ করলে এটি পাঠকারীর প্রয়োজন পূরণ করে।" (আবু দাউদ)
সুরা ইয়াসিন একটি অনুপ্রেরণাদায়ক সুরা যা মানুষের অন্তরে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসকে দৃঢ় করে এবং আখিরাতের জন্য প্রস্তুত হতে উদ্বুদ্ধ করে।